স্বল্প সময়ে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি ৩৮তম বিসিএস

প্রথমত আমাদের মনে রাখতে হবে অসীম সিলেবাস পড়ে সসীম সময়ের এই চোখ ধাঁধাঁনো পরীক্ষায় অগণিত মেধাবী শিক্ষার্থীকে পেছনে ফেলে নিজের শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় দিতে গিয়ে আমাদের অবশ্যই এমন বিষয়গুলো ফেলে আসা যাবেনা, যেগুলো সবাই সহজভাবে লুফে নিবে।

দ্বিতীয়ত প্রথম শর্তে কিছুটা দুর্বলতা বিভিন্ন কারণে আসতেই পারে সেজন্য ব্যাক আপ হতে পারে এমন কিছু প্রশ্নের আত্মবিশ্বাসী উত্তর যেগুলো আপনাকে এগিয়ে রাখবে দুর্দিনে, কাটমার্কের দোলাচলে, হিসেব নিকেশের মারপ্যাঁচে।

সেজন্য আমাদের বিষয়ভিত্তিক আলোচনার দিকেই যাওয়া যাক

♦বাংলা+ব্যাকরণ♦
★সাহিত্যে মৌলিক সাহিত্যিকদের জীবনী পড়ে রাখুন বোর্ড বইগুলো থেকে।
★জন্মমৃত্যু সালগুলো মনে রাখুন তাদের, যাদের নাম সচরাচর চোখে পড়ে।
★ব্যাকরণ অংশ পুরোপুরি চর্চার উপরেই রাখুন, সহজ প্রশ্নগুলোতে যেন বিভ্রান্ত না হতে হয়।

♦ইংরেজি+সাহিত্য♦
★যুগ-বিভাগ আর যুগ অনুসারে সাহিত্যিকদের নাম মনে রাখুন নিজের তৈরি কৌশল দিয়ে।
★কিছু অদ্ভুত বইয়ের নাম আসবেই, যেগুলো ঐদিনই প্রথম দেখবেন, ঘাবড়ানোর কিছু নেই সেজন্য। তবে, বাজারের বইগুলো থেকেই কমন পড়বে যে প্রশ্নগুলো, সেগুলো যাতে বাদ না পড়ে তাই পড়ুন বেশি করে মনে রাখার জন্য।
★ভোকাবুলারি আর নয়, গ্রামারের যে নিয়মগুলো জানেন, সেগুলোই বারবার অনুশীলনে রাখুন।

♦গণিত+মানসিক দক্ষতা♦
★বিন্যাস-সমাবেশ-সম্ভাব্যতা যদি আগে থেকেই খুব ভালো না বুঝেন, রেখে দিন। বাকিগুলো নিশ্চিত করুন, যাতে হতাশ না হোন। "কাঁটার আঘাত সহ্য হয়, ফুলের আঘাত বড়ো অসহ্য"।
★বীজগণিতের উৎপাদক পড়তে গিয়ে সময় নষ্ট করবেন না, সহজ আসলে অপশনের হেল্প নিয়ে অল্প সময়েই পারবেন।
★বাসায় অবশ্যই ক্যালকুলেটর ছাড়াই প্র‍্যাক্টিস করবেন, তাতেই অভ্যস্ততা আসবে।
★মানসিক দক্ষতার জন্য প্রস্তুতির চেয়ে বেশি দরকার পরীক্ষার হলে ঠাণ্ডা মাথা। তবুও অবসর সময়ের কিছু অনুশীলন প্রশ্নের ধরণকে পরিচিত রাখবে।

♦বিজ্ঞান-ভূগোল-পরিবেশ♦
★এখানের নম্বরগুলো একেবারেই ম্যাথের মতো, পারলে কোনোরকম দ্বিধাহীনভাবেই এগিয়ে থাকবেন। তাই মনে করি, এখনো যা সময় আছে, বারবার পড়ে রাখুন।
★সালভিত্তিক সামান্য কিছু প্রশ্ন পরিবেশ ও দুর্যোগে থাকে, সেগুলো বিভ্রান্ত করতে পারে। সেজন্য নিজস্ব কৌশলকে কাজে লাগাতে পারলে সবচেয়ে ভালো।

♦বাংলাদেশ+আন্তর্জাতিক♦
★সাম্প্রতিক আলোচিত বিষয়গুলো শুধু পড়ুন, বেশি পড়তে গিয়ে সময় নষ্ট না করাই ভালো।
★সহজ বলে পড়া অধ্যায়গুলোকে ভাঁজ করে না রেখে সেগুলোও কম সময়ে দেখে রাখুন। কারণ, পরীক্ষার হলে সেগুলোর জন্য আফসোস হয় বেশি।
★সালভিত্তিক প্রশ্নগুলো আলাদা নোট করে রাখুন, অন্য যেকোনো প্রশ্নের চেয়ে এগুলো বেশি গুরুত্বের দাবীদার।

♦নৈতিকতা-সুশাসন♦
★উক্তি সম্পর্কিত প্রশ্নগুলো বাদ রেখে বাকি সংখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিন, এগিয়ে থাকবেন।
★সবচেয়ে বিদঘুটে অংশ এটি আমার কাছে পুরো সিলেবাসের মধ্যে। তাই ৫/৬টি প্রশ্নের নিশ্চিত উত্তর এখান থেকে দিতে পারলেই সন্তুষ্ট থাকা উচিৎ।

মডেল টেস্ট দিন, নিজেকে যাচাই করুন, কম নম্বর উঠলে হতাশ না হয়ে বরং নিজের দুর্বলতা খুঁজে সেগুলোকে সবল করে তুলুন।

সর্বোপরি, এমনভাবে পড়ুন যাতে সহজপ্রশ্ন বা কমনপ্রশ্নের নিশ্চিত উত্তর দিতে অনিশ্চয়তায় না পড়তে হয়। মনে রাখা ভালো, যা আপনার জন্য কঠিন, তা প্রায় সবার জন্যই কঠিন, সেগুলো নিয়ে ভাববেন না। বেশি নম্বর পেয়ে এগিয়ে থাকার জায়গা প্রিলি না, ওটা লিখিত। কাজেই শুভকামনা থাকবে আপনাদের কৌশলী পড়াশোনার উপর।

লিখেছেন:
মাসুদ মুস্তাফিজ
অর্থনীতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
(৩৬তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত)

Comments

Popular posts from this blog

How to learn Android app development for beginners?

Job at Trade Fair 2018

Shortcut BCS Preparation